চলমান শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা হাওয়ায় মানুষ অনেকটাই ঘরবন্দি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
সন্ধ্যা থেকে দুপুর পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ঝড়ছে শিশির। কুয়াশার রেশ কাটছে না দুপুর পর্যন্তও ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সড়কে। সূর্য্যের দেখা মিলছে না গত চার দিন ধরে। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৯ ডিগ্রিতে। এতে বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে শ্রমিক, রিকশাচালক, কৃষি দিনমজুর এবং অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষ সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছে না। তীব্র শীতের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ঘন কুয়াশায় আলু,মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এবার শীতে সরকারি বেসরকারিভাবে যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।
পাথরভাঙা শ্রমিক হাবিব, বদি, মেনহাজ জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় সোনাহাট স্থলবন্দরে তাঁদের কাজে যোগ দিতে হয়। বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে বন্দরে পৌঁছতে এখন তাঁদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে শীতের তীব্রতার কারণে শীতজনিত রোগ-বালাই বাড়ছে।
অটোচালক হামিদুল জানান, অটো নিয়ে তিনি রাস্তায় বের হয়েছেন কিন্তু প্রয়োজন সংখ্যক যাত্রী পাচ্ছেন না। গত দুই দিনে অটো মালিকের জমার টাকা রোজগার করতে পারেননি তিনি। পরিবারের জন্য খাবার কিনতে কষ্ট হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, এমন অবস্থা আরো ৩-৪ দিন থাকতে পারে। কুড়িগ্রামে আজকের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দিনে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা শীতজনিত রোগ বেড়েছে। প্রায় দ্বিগুণ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন, যার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন, ‘শীতবস্ত্র হিসেবে প্রথম পর্যায়ে চার হাজার ৬০০ কম্বল পাওয়া গেছে, যা ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল দ্বিতীয় ধাপে আরো দুই হাজার কম্বল পাওয়া গেছে যা আগামী এক- দুই দিনের মধ্যে বিতরণ শুরু করা হবে।’