বরগুনার বেতাগী পৌরসভার নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর। এ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদিন ৩৮ টি মাইক দিয়ে তাঁদের প্রচার চালানো হচ্ছে। এসব মাইকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বেড়েছে হার্ট ও কানের রোগীদের।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেতাগী পৌর নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী, ২৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন করছেন। একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় একটি করে মাইকিং করার নিয়ম রয়েছে। প্রতিদিন বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলে মাইকিং।
গত ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে মাইকে প্রচার চলছে। ৭.৮৭২ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভার ২২ হাজার মানুষের বসবাস। ঠিক ২ টার সময় থেকেই প্রার্থীদের সর্মথকেরা মাইকিং প্রচারণার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীদের একই সড়কে অটো রিক্সায় ৭/৮ টি প্রচারণার মাইক চলে। জনসাধারণ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওই সময়টুকু দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরতে দেখা গেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে দু’ জন জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জনগণের কল্যাণে অনেক আচরণবিধি করেছে। বিধিগুলো মানছেনও প্রার্থীরা। ভোটের সময় মাইকের শব্দে লোকজনের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। কমিশন মাইকিং করার সময়ের ব্যাপারে আরো কঠোর হলে জনগণ উপকৃত হবে।’
এসএসসি পরীক্ষার্থী রাকিব হোসেন জানায়, ‘দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মাইকিং চলে। এতে আমাদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়। অনেক সময় মাইকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে কানে আঙুল দিয়ে পড়ার টেবিলে বসে থাকতে হয়।’
বেতাগী পৌর শহরের মাইক ব্যবসায়ীরা জানান, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর লোকজন দেড়টার দিকে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মাইক বেঁধে প্রস্তুত করে রাখেন। দুইটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু করে দেন মাইকিং।’
শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। অতিমাত্রায় শব্দদূষণে হার্ট ও কানের রোগীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন।
বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাখ সরকার বলেন,’ মাত্রারিক্ত উচ্চ শব্দে হার্ট ও কানের রোগীরা ঝুঁকিতে থাকে।’
পৌর শহরের ওষুধ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন বলেন, ‘শহরে একটির পর একটি মাইক আসতেই থাকে। এতে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। মাইকের যন্ত্রণাদায়ক শব্দের কারণে মুঠোফোনে কথা বলাসহ কাজকর্ম করা যায় না। মাইকিংটাকে আরো সীমিত করে দেওয়া উচিত।’
প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। আর বেশি দিন না থাকায় তাঁরা প্রতিদিনই মাইকিং করাচ্ছেন। জনগণের কথা চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন মাইকিংয়ের সময়সীমা কমিয়ে আনলে তাঁরা মেনে নেবেন।
উপজেলা নির্বাচন ও সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মনীতি মেনেই প্রার্থীরা মাইকিং করছেন। এতে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। ভোগান্তির কথা চিন্তা করে মাইকিংয়ের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নীতিমালা করলে জনগণ উপকৃত হবে।’
source